,

পিটিএসডিঃ রোমন্থনে ফেলে আসা স্মৃতিভাণ্ডার!

dt_190401_ptsd_stress_depression_800x450
একটু আলাপন!
২০১০ সালের ২৭ জুনের কথা মনে আছে?
কী হয়েছিল সেদিন এটা ভাবতে ভাবতে যদি মস্তিষ্কের নিউরনে বারকয়েক নাড়া দিয়েও উত্তর বেড়িয়ে না আসে তবে আজকের লেখন আপনার জন্য। জেনে রাখলে ক্ষতি নেই, ঐদিন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস দিনটিকে “পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডার” দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। শুধু তাই নয় যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সেন্টার ফর পিটিএসডি (National Center for PTSD) জুন মাসটিকেই “পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডার সচেতনতা মাস” হিসেবে ঘোষণা দিয়ে ফেলেছে। আর শুধু ঘোষণা দিয়েই ক্ষান্ত নন এরা, পিটিএসডির ভয়াবহতা এবং রোগটির প্রতি সচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে দিবস এবং মাস উভয়ই পালিত হয়ে আসছে দেশটিতে।
ফিরে আসি দেশের সংবাদে!
ভাবছেন এই খবর জেনে আপনার কী কাজ? বিদেশে কত কীই না হয়ে থাকে, দেশে বসে এই জিনিস জেনেই বা আপনার কী? এই ভাবনা যদি ক্ষুদ্রাকৃতির হয়েও মনের কোথাও উঁকিঝুঁকি মারে তবে আপনার জন্যই বলছি, রোগটা আমাদের দেশেও বিরল নয়! নড়লো টনক? আসুন সত্যি একটা গল্পে যাই-
“চোখ বন্ধ করলে মনে হয় আমার পাশে লাশ!”
ছবিটা চেনা লাগছে? প্রিয় মুখের সন্ধানে ছবি হাতে এমন হাজারও মানুষের ভিড়, এ কি কাম্য? রানা প্লাজার এ কালো দিন অনেকের ঘুম হারাম করেছে। জানেন? ©europarl.europa.eu
লাইনটা একটু চেনা লাগে? মনে পড়ে? শুনেছেন বা পড়েছেন কোথাও এমন চেনা অনুভূতি কাজ করছে? রানা প্লাজার কথা মনে আছে পাঠক? ২৪শে এপ্রিল, ২০১৩ সালের ঘটনায় কিছু মানুষ এমনিই শ্রম দিচ্ছিলেন, মানবিকতার টানে। তেমনি একজন লড়ে যাওয়া উদ্ধারকর্মী যিনি রানা প্লাজার ধ্বংসস্তুপে উদ্ধারকাজে ছিলেন। তার ওই উক্তিটি সংবাদ মাধ্যমের কল্যাণে অনেকেরই চোখে পড়ার কথা অথবা এই উক্তি দেখলেই ঐ সময়টা চোখের সামনে ভেসে ওঠার কথা। মানবিক ঐ বিপর্যয়ের ঘটনাটা সংশ্লিষ্ট অনেকের মনেই বেশ গভীরভাবে প্রভাব ফেলেছে। অনেকে এখনও ঘুম ভেঙে চিৎকার করে ওঠেন। জানেন আপনারা?
রোগ বিষয়ক কিছু আলাপন!
 PTSD বা Post Traumatic Stress Disorder. কী এটা? শারীরিক না মানসিক? কেমন এটা? বোঝার উপায় কী? সাড়াতে কী লাগে? ইত্যাদি ইত্যাদি প্রশ্নেরা ভিড় জমাচ্ছে কি? আজকের লেখন আপনার জন্যই। একটু খেয়াল করেই পড়ুন। বুঝিয়েই লিখছি।
যদি পুরো বাংলা করতে যাই তাহলে একে ‘দূর্যোগ পরবর্তী মানসিক সমস্যা‘ বললে কিছুটা অর্থ বুঝা যাবে। কোন একটা দূর্যোগের ভেতর দিয়ে যদি কেউ যায় কিংবা অনেকটা সময় ঐ দূর্যোগের ভেতর অতিক্রান্ত করে তবে ধারণা করা যায় তার এই সমস্যা হওয়ার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে। তবে হ্যাঁ, এই সমস্যাটা আদতে মানসিক। শারীরিক ভেবে ভয়ের কিছু নেই।
তবে মানসিক ভেবেই যে হাল ছেড়ে দিয়ে নিশ্চিন্তে থাকবেন, তা কিন্তু হবে না। শরীরের ক্ষত বোঝা যায়, দেখা যায়। মনের হলে দেখানো যায় না, বোঝা যায় না। তাই একটা মিষ্টি হাসির আড়ালে কষ্ট লুকিয়ে যারা “বিন্দাস” ভাব দেখান, বিশ্বাস করুন আপনার ঐ মিষ্টি হাসির পেছনে থাকা কষ্টটা বোঝা যায়! বিষন্ন অথচ স্নিগ্ধ হাসি, হ্যাঁ বোঝা যায়। মন প্রফুল্ল থাকলেও যেমন চেহারায় তার প্রভাব পড়ে তেমনি মন বিষন্ন থাকলেও প্রভাব পড়ে। এ আপনি মেনে নিন। তাই রোগ শরীরের হোক কিংবা মনের, অবহেলা করবেন না।
অনেক জ্ঞানী কথাবার্তা হলো, এবার একটু প্রসঙ্গে ফেরা যাক? চলুন-
মানবজীবন ঘটনাবহুল। জীবনের নানা পর্যায়ে নানান ধরণের সুন্দর কিছু মূহুর্ত অথবা বিভৎস কিছু মূহুর্তের সাক্ষী হতে হয় মানুষকে। ঘটনাগুলোকে সংরক্ষণ করার কাজে নিয়োজিত থাকে আবার মস্তিষ্ক। সেই অজস্র ঘটনাগুলোর কোনটা না কোনটা ব্যক্তির জন্য আতঙ্কের, তীব্র ভয়ের, অস্বস্তির, কখনওবা নিরাপত্তার জন্য ভয়াবহ হুমকির। ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরেও যখন একই ধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে অথবা ব্যক্তি যখন একই রকম ঘটনার সম্মুখীন হয়, ঠিক তখনই আঘাত পরবর্তী মানসিক চাপ বা PTSD তার অস্তিত্বের জানান দেয়।
রোগটি মূলত উদ্বিগ্নতাজনিত মানসিক রোগ। ইতিহাসে কিংবা আরও আগে এই রোগটি নানান নামে পরিচিত থাকলেও ভিয়েতনাম যুদ্ধ থেকে ফেরত আসা কিছু সৈনিকের মধ্যে শারীরিক ও মানসিকভাবে এই রোগের উপসর্গ দেখা যায়। যার ফলস্বরূপ ১৯৮০ সাল থেকে বিভিন্ন নামের অধিকারী এই রোগটি কেবল PTSD নামে পরিচিত।
রোগের পেছনের গল্পটা তাহলে কী?
PTSD যে আদতে আগাগোড়া একটা মানসিক রোগ, সেটা তো পাঠক সমাজ এতক্ষণে একটু হলেও বুঝতে সক্ষম হয়েছেন। তাই না? তাহলে তো প্রশ্ন আসাটা খুব স্বাভাবিক যে এই রোগ হওয়ার পেছনের গল্পটা কেমন। জানার আগ্রহ এসেছে? তো চলুন, একটু ধারণা দেওয়া যাক-
যদি জিজ্ঞাসা করেন যে PTSD এর শিকার মূলত কারা? আদতে এর উত্তর নেই। এ রোগ হতে পারে যে কারও ক্ষেত্রে। ঝুঁকির একটা বয়সসীমা নির্ধারণ করে দিয়ে নিশ্চিন্তে রাখার মতো তেমন নিশ্চিত কিছুই নেই এই রোগে। যে-কোন বয়সের কেউ আক্রান্ত হতে পারে। তবে গল্পের সূচনা গড়পড়তা। কেমন সেটা? জানাচ্ছি-
ধরুন, প্রাকৃতিক বড়ো কোন দূর্ঘটনা (হতে পারে ঝড়, ভূমিকম্প, বন্যা ইত্যাদি), অথবা মানবসৃষ্ট কোন বিপর্যয় (যুদ্ধের মুখোমুখি হওয়া কিংবা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী কোন সৈনিক ইত্যাদি), কিংবা ব্যক্তিগত কোন দূর্ঘটনা যেটা সম্পূর্ণ অনাকাঙ্ক্ষিত (চাইল্ড এবইউজ, ধর্ষণ, আনওয়ান্টেড টাচ, জোর করে বিয়ে, ভালোবাসার প্রলোভনে বিশ্বাস ভাঙা ইত্যাদি), বা অনেক দিন ধরে শারীরিক নির্যাতনের মধ্যে দিয়ে যাওয়া ব্যক্তি ঐ পরিবেশ থেকে বেড়িয়ে আসলেও PTSD দেখা দিতে পারে। অনেকক্ষেত্রে আবার নিজে সরাসরি কোন কিছুর মুখোমুখি না হলেও খুব কাছের কাউকে এসব দূর্যোগের মধ্য দিয়ে যেতে দেখা অথবা কোন দূর্যোগে দূর্গত ব্যক্তিদের উদ্ধার কাজে নিয়োজিত থাকা স্বেচ্ছাসেবিদের মধ্যেও এই রোগ দেখা দেয়। যেমনটা রানা প্লাজার উদ্ধারকর্মীর মুখ থেকেই আমরা জেনেছি।
 বিষয়গুলো দূর থেকে দাঁড়িয়ে ভাবলে খুব স্বাভাবিক নিরবিচ্ছিন্ন ঘটনা মনে হলেও যে বা যারা খুব কাছ থেকে এর মধ্য দিয়ে যান, তাদের জন্য কিন্তু এসব কোনটাই আদতে সুখময় স্মৃতি না।
PTSD নিয়ে একটু আলাপন!
মোটামুটি অনেকগুলো আলাপ হলো PTSD নিয়ে কিন্তু আদতে এটা কী, সেটার একটু বিশদ আলাপনের প্রয়োজন আছে, তাই না? সরাসরি বলতে গেলে মোটামুটি সাধারণ একটা মানসিক অবস্থা হিসেবে ব্যাখ্যা করা যায় PTSD কে। এই রোগটি মূলত তাদের মধ্যেই বেশি দেখা যায় যারা নিজের জীবনে তীব্র এবং গভীর দুশ্চিন্তাজনক কিছু অথবা অনেক ঘটনার সাক্ষী হয়েছেন। যে ঘটনাগুলো আদতে কোন সুখের ঘটনা নয় বরং সেগুলো ব্যক্তির মনে এত বেশি প্রভাব ফেলে দেয় যে নিত্যদিনের স্বাভাবিক জীবনে ছন্দপতন ঘটে যায়। প্যানিক অ্যাটাক কিংবা মানসিক অবসাদ সহ অন্যান্য মানসিক বিকারগ্রস্থ অবস্থার সাথে এই রোগের মিল কিছুটা দাঁড় করানো যায় যেটা রোগী খুব সহজেই উপলব্ধি করতে পারেন। তবে রোগটির ভয়াবহ দিক হলো, আত্মহত্যার প্রবৃত্তিকে জাগিয়ে তুলতে সক্ষম PTSD।
PTSD রোগের লক্ষণ এবং উপসর্গঃ
PTSD সম্পর্কে কিছুটা ধারণা তো হলো। এবার তাহলে কী দরকার? ঠিক ধরেছেন। লক্ষণ আর উপসর্গগুলো। কারণ স্বাভাবিকভাবেই ভাবুন, আপনি একটা রোগের নাম এবং তার কিছু পরিচয় জানলেন। এখন সেই রোগের লক্ষণ আর উপসর্গগুলো জানা থাকলে আপনি কিন্তু খুব সহজেই এই রোগ সম্পর্কে সচেতন থাকতে পারবেন। শুধু তাই না, যদি আশেপাশে কারও মধ্যে এই রোগের লক্ষণ এবং উপসর্গগুলো দেখতে পান তবে দেরি না করে মানসিক চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া জরুরি বইকি। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক-
তীব্র মানসিকচাপ যুক্ত কোন ঘটনার নিবিড় উপলব্ধি অথবা খুব কাছ থেকে এসব কিছু প্রত্যক্ষ করার অভিজ্ঞতা যদি থাকে। দুঃস্বপ্ন কিংবা কোন দুঃসহ ঘটনার স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে হঠাৎ হঠাৎ ফ্ল্যাশব্যাক, যার অনুভূতি নিদারুণ সেই ঘটনার অনুরূপ। কিংবা কিছু মানুষকে দেখবেন যারা কিছু বিশেষ পরিস্থিতি, স্থান, কিছু ব্যক্তিদের এড়িয়ে চলছে; কারণ অনুসন্ধানে পাবেন নিদারুণ কিছু সত্যের, যেটা তারা এড়িয়ে চলছে কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে যা হয়তো তাদের রোজকার স্বাভাবিকত্বকে নড়বড়ে করে তুলতো। যে ঘটনা কিছু মানুষের কাছে খুব স্বাভাবিক সে ঘটনাই হয়তো অন্য কারও কাছে জীবন-মরণের সন্ধিক্ষণে নিয়ে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট। ঘটনার পেছনের গল্পটা হতে পারে অন্য রকমের রঙহীন কিছু, যা অনেকের কল্পনার বাইরে। হতে পারে না?
দুঃসহ মানসিক স্মৃতি হতে পারে দুঃস্বপ্নের কারণ image source: The Bhopal News
PTSD রোগের কারণঃ
রোগের কারণ বলার আগে প্রসঙ্গ ঠিক রেখে একটু অন্য আলাপে যাই। আলাপনের বিষয় শরীর। আমরা শরীর নিয়ে ভাবি, চিন্তা করি। এর ভালো-খারাপ নিয়ে মাথা ঘামাই। শরীর ভালো রাখতে যা যা করা লাগে, তা করার চেষ্টাও করি অনেকে। কি তাই তো?
এবার প্রসঙ্গে আসি, মনের ব্যাপারে এই ভাবনাটা ক’জন ভাবেন? মন খারাপ কিংবা বিষন্নতাকে কয়জন ঠিকঠাক ডিঙিয়ে যেতে পেরেছেন? অথবা যদি প্রশ্ন করি, মনকে গুরুত্ব দিচ্ছেনই বা ক’জনে? উত্তর কী পাবো সে আপনারা জানেন। “আরেহ এত ভাবার টাইম কই মন নিয়ে” এই চিন্তা থেকে মনকে আমরা গুরুত্ব দেই না। ফলে কী হয় জানেন? প্রিয় পাঠক, শরীরের অসুখে মানুষ মরে ঠিকই, মনের অসুখে এর চেয়ে বেশি মরে, জানেন আপনারা? আত্মহত্যা যারা করে কেউই শারীরিক অসুখে করেনি বরং করেছে মনের অসুখে। এ খবর রাখেন আপনারা? রাখেন না! রাখলে আত্মহত্যা হতোই না এদেশে। যাকগে! আবার প্রসঙ্গে আসি।
যতই বলি, মনের অসুখ কিছুই না, সব কাজ ফাঁকি দেওয়ার লক্ষণ। আদতে কী জানেন? আমাদের শরীরটা না মনের উপর অনেকটা নির্ভরশীল। কতটা নির্ভরশীল জিজ্ঞাসা করলে বলতে হবে, মানসিক যেকোন আঘাতে মানসিক যে অবসাদের সৃষ্টি হয় তার প্রতিক্রিয়া খুব শক্তভাবেই পড়ে শরীরের উপর। মানসিক চাপ কমাতে অনেক মানুষ একটা লক্ষ্যের দিকে অগ্রসর হতে থাকেন যাতে করে ব্যস্ততায় ভুলে থাকা যায়। আদতে তা কতটা কাজে দেয় তা বলা মুশকিল। কেন জানেন? শক্ত মানসিকতার মানুষ কিন্তু সবাই না। এ আপনি স্বীকার করেন? বেশিরভাগ মানুষ দূর্বলচিত্তের এবং তারা ইচ্ছাশক্তির উপর জোর প্রয়োগ করতে জানেন না। ফলে তারা “যা হবার হবে, থাক গে” ভাবনা থেকে হাল ছেড়ে দিয়ে আবেগ এবং ভয়কে দমিয়ে রাখার একটা ব্যর্থ প্রয়াস চালান। এতে আর কিছু হোক বা না হোক PTSD যে দলবল নিয়ে হাজির হয়ে যায়, তা কিন্তু নিশ্চিত!
কিছু বিষয় বলি, কেমন? দেখুন তো মিল পান কী না!
ধরুন- সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ, কিছু অপরাধ যা সংঘটিত হওয়ার পেছনের গল্পে বড়ো করে কারণ হিসেবে থাকে হিংসা, দুর্ব্যবহার, যুদ্ধ (সামরিক কিংবা অন্যান্য), প্রাকৃতিক যে-কোন দুর্যোগ, যে-কোন গুরুতর দূর্ঘটনা কিংবা হিংসাত্মক কোন বিষয়ের শিকার হয়ে মারাত্মকভাবে মানসিক আঘাত পাওয়া। আপাতদৃষ্টিতে এগুলোকে খুব স্বাভাবিক, দৈনন্দিন ব্যাপার মনে হলেও একটু ভেবে দেখুন তো, আদতে এর প্রয়োজনিয়তা আছে কি? কাউকে কষ্ট দেওয়ার অধিকার আসলেই কি আছে আমাদের? চারপাশে দেখবেন অনেকেই মুষড়ে পড়ে চুপসে যায়। আহত হয়, মানসিকভাবেই। কিন্তু আবার নিজেকে দাঁড় করায়, মাঝে কেটে যায় অনেকগুলো মূহুর্তের যোগফল। কিন্তু গল্পটা অজানাই থাকে।
PTSD এর নির্ণয় এবং চিকিৎসাঃ
পেশাদার মানসিক চিকিৎসক এর সহায়তার বিকল্প নেই। সত্যিই নেই। কেন বলছি এ কথা? পেশাদার ডাক্তার কিছু প্রশ্ন তৈরি করেন মানসিক রোগসমূহ নির্ণয় করার লক্ষ্যে। সে প্রশ্ন যথাযথভাবে তৈরি কেবল একজন পেশাদার ব্যক্তির পক্ষেই সম্ভব। অথবা যারা এসব নিয়ে চর্চা করেন, তারাও পারবেন। মোট কথা কিছু বিষয়ে ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে এবং প্রাপ্ত উত্তরগুলো মূল্যায়নের মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করা হবে। প্রশ্ন তৈরির বেলাতে রোগির আবেগপ্রবণতাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয় এর ফলে পুরো প্রক্রিয়া বেশ সংবেদনশীল হয়ে থাকে। সুতরাং ঘাবড়ে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। আক্রান্ত ব্যক্তি তার সুবিধামতো সাইকোলজিস্ট কিংবা সাইকাইট্রিস্ট এর শরণাপন্ন হতে পারেন। এক্ষেত্রে চিকিৎসা পদ্ধতি দুইরকম। সাইকোলজিস্ট এর কাছে গেলে ব্যক্তি বিশ্রাম কৌশল, কাউন্সেলিং, গ্রুপ থেরাপি, কগনিটিভ বিহেভিরিয়াল থেরাপি, বন্ধুদের সাহচর্য এবং পরিবারের সহমর্মিতা কীভাবে পেতে পারেন তার দিকনির্দেশনা পান এবং সাইকাইট্রিস্ট এর কাছে ঔষধ বিশেষ করে অ্যান্টিডিপ্রেসান্ট এর বিষয়ে পরামর্শ পান। তবে ঔষধের ক্ষেত্রে আবার ঘাবড়ানোর কিছু নেই, রোগির অবস্থার তীব্রতার উপর ঔষদের মাত্রা এবং পরিমাণ, কখনওবা ঔষধও নির্ভর করে। অর্থাৎ আদৌ ঔষধ লাগবে না-কি সাইকোলজিস্টই এর সমাধান দিতে পারবেন, সেটাও বুঝা যাবে। সুতরাং সমাধান আছে। অপেক্ষা শুধু আক্রান্ত ব্যক্তির একটা সাহসী পদক্ষেপের।
This Bangla article is about PTSD (Post Traumatic Stress Disorder), a mental problem.
Reference:

Related Articles

অন্যান্য
Sirajul Islam Mozumder

পিকি ব্লাইন্ডার্সঃ বিংশ শতাব্দীতে বার্মিংহামের রাস্তা দাপিয়ে বেড়ানো এক দস্যুদল

“বাই দি অর্ডার অব পিকি ব্লাইন্ডার্স”। আপনি যদি সিরিজপ্রেমী হয়ে থাকেন, তবে এই বাক্যটির সাথে

বিস্তারিত »
সোশ্যাল মিডিয়া
পাঠক প্রিয়
খেলা
ফেইসবুক পেজ