মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ! শিক্ষার্থী তো বটেই, পর্যটনপ্রেমীদের কাছেও যেন এক স্বপ্নের নাম। আয়তনে প্রায় ১কোটি বর্গকিলোমিটারের কাছাকাছি এই দেশটিতে প্রকৃতি যেন হাজির হয়েছে এক অনন্যরূপে। প্রায় ১কোটি না বলে ৯৮.৩ লক্ষ বর্গকিলোমিটারই না হয় বলি; আর আজকের গল্পটা এই দেশেরই এক অপরূপ অঙ্গরাজ্য ক্যালিফোর্নিয়াকে নিয়ে। টিম কিংবদন্তি’র সাথে সাক্ষাৎকার পর্বে যোগ দেয়া জার্মানিতে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থী মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান তমালের বর্ণনায় উঠে এসেছে এক চমকপ্রদ গল্প; এক ভালো লাগার গল্প।গল্পটা যে জড়িয়ে আছে আমার আপনার আমাদের সবারই সাথেই ! কিন্তু কীভাবে ? চলুন তাহলে আবিষ্কার করুন আপনি নিজেই। সাথে আছি আমরা, সাথে আছে টিম কিংবদন্তি।
সুপ্রিয় পাঠকদের জন্য আজকের চমৎকার গল্পটি রচিত হয়েছে আমাদের আজকের অতিথির বয়ানে।
পর্যটনপ্রেমীদের কাছে স্বপ্নের এক দেশের নাম যদি বলি ‘ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র’ তাহলে কি ভুল হবে ? ভ্রমণ কিংবা ঘুরাঘুরি করা, বিশ্বটাকে নিজের চোখে আবিষ্কার করার শখ সেই ছোটবেলা থেকেই । যান্ত্রিক জীবনের বেড়াজালে কত শত শখই তো পূরণ হয় না, তবুও একবার শখ পূরণের উদ্দেশ্যেই হোক কিংবা খানিকটা প্রকৃতির নিকটবর্তী হওয়ার লক্ষ্যেই হোক; সুযোগ হয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্য নিজের চোখে আবিষ্কার করার। সেই ভ্রমণে অসংখ্য স্মৃতির মাঝেও একটি বিশেষ স্মৃতি এখনো দাগ কেটে আছে আমাদের বন্ধুমহলের মনস্পটে। পাঁচ বন্ধু আড্ডা দিচ্ছিলাম এক কফি শপের সামনে। কফির কাপে আড্ডার ঝড় উঠেছিল প্রাণের ভাষা বাংলাতেই। এর মধ্যেই এক মার্কিন দম্পতি আমাদের সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। কিছু দূর যাবার পর, তারা আবার আমাদের দিকেই ফিরে আসছেন। হাসিমুখে অল্পবিস্তর কৌতূহল নিয়েই তাঁদের দিকে তাকালাম, তারাও সহাস্যে আমাদের দিকে তাকিয়ে খানিকটা ইতস্তত করছিলেন।
আমার এক বন্ধু বিনয়ের সাথে ইংরেজিতে জিজ্ঞেস বললো, “শুভ বিকেল, আমরা কীভাবে আপনাদের সাহায্য করতে পারি ?”
মার্কিন ভদ্রমহিলা এবার লাজুক ভঙ্গিতে ইংরেজিতে বললেন,” শুভ বিকেল। যদি কিছু মনে না করেন, একটি প্রশ্ন জিজ্ঞেস করতে পারি ?”
“অবশ্যই ! “
“ ইয়ে মানে, আপনারা কোন ভাষায় কথা বলছিলেন একটু আগে? “
“ জি , বাংলা ! “
“ সাচ অ্যা সুইট ল্যাঙ্গুইজ ! দ্যা ফাইনেস্ট ল্যাঙ্গুইজ হ্যাভ উই এভার লিস্যান্ড টু ! ”
ভদ্রমহিলা আমাদের এই প্রাণের বাংলা ভাষাকে শুধু সুমধুরই বললেন না; সেই সাথে তাঁদের জীবনে শ্রবণকৃত সবচেয়ে সুন্দর ভাষা হিসেবেও আখ্যা দিলেন। আমাদের পাঁচ বন্ধুর মনে তখন কি পরিমাণ আনন্দ, বুঝতেই পারছেন !
বিনয়ের সাথে ধন্যবাদ জানিয়ে মার্কিন দম্পতি হাঁটা দিলেন তাঁদের গন্তব্যে। আর আমাদের পাঁচ বন্ধুর স্মৃতির ক্যানভাসে আঁকা হয়ে গেল “সাচ অ্যা সুইট মেমরি”।
কৃতজ্ঞতাঃ মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, ইউনিভার্সিটি অব ক্যাসেল, হেসেন, জার্মানি।
পথে প্রবাসে ঘটা জীবনের নানান অভিজ্ঞতা পাঠকদের সাথে শেয়ার করবেন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা । আমরাও চমৎকার কিছু অভিজ্ঞতার পাঠক হবার অপেক্ষায় রইলাম। দেশে বিদেশের নানান অভিজ্ঞতা জানাতে পারেন আপনিও, জি আপনাকেই বলছি। টিম কিংবদন্তি আপনারই অপেক্ষায়।
ভালোবাসা রইলো পাঠক লেখক সবার জন্য, এক পৃথিবী ভালোবাসা !
ফিচার ছবিঃ Bobby Yang ; unsplash